প্রাচীন ভারতীয় লিপিমালা, প্রাচীন লিপি-বিজ্ঞান বিষয়ক বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'প্রাচীন ভারতীয় লিপিমালা'
বইয়ের ধরন- প্রাচীন লিপি-বিজ্ঞান বিষয়ক , দুষ্পাপ্য বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৬১৮
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৫০ এমবি
আপলোডার- বিনিতা চ্যাটার্জি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
ভূমিকা:
আমাদের মাতৃভাষা বাংলার সঙ্গে প্রাচীন ভারতের অর্থশ্রেণীর ভাষাবর্গের প্রত্যেকটিরই কোন না কোন সম্বন্ধ বিদ্যমান। আধুনিক পণ্ডিতগণ প্রাচীন ভারতবর্ষে আর্যগোষ্ঠীর, দ্রাবিড়গোষ্ঠীর, অস্ট্রিকগোষ্ঠীর, ভোট-বর্মীগোষ্ঠীর এবং গোষ্ঠীবহির্ভূত গোষ্ঠীর বহু ভাষার যে অস্তিত্ব-নির্ধারণ করেছেন তন্মধ্যে কেবল আর্যগোষ্ঠীর ভাষা বা ভাষাবর্গই প্রাচীন ভারতের সমগ্র ভূ-ভাগের প্রায় চারভাগের তিনভাগ স্থান জুড়ে রয়েছে। এ ভাষাগুলোর নাম- অসমীয়া, উড়িয়া, কনৌজী, কাশ্মীরী, কুমায়ুনী, কোঙ্কনী, গাড়োয়ালী, গুজরাতী, ছত্রিশগড়ী, পাঞ্জাবী, পুশতু, বঘোলী, বঙ্গারু, বাংলা, বুন্দেলী, বেলুচী, ব্রজবুলি বা ব্রজভাখা, ভোজপুরী মারাঠী, মৈথিলী, রাজস্থানী, শাবরী, শিয়াভাষা, সিন্ধী এবং হিন্দি (পূর্বী)। দ্রাবিড় গোষ্ঠীর ভাষাগুলোর নাম—ওরাঁও, কনাড়ী বা কানাড়ী, খোঁড়া, গোঁড়, তামিল, তেলেগু, তুলু, পশ্চিমা হিন্দি এবং ব্রাহুই। এসব ভাষার অধ্যুষিত ভূ-ভাগের পরিমাণ অবশিষ্ট চারভাগের একভাগ স্থানের অন্তত অর্ধেক। অস্ট্রি কৃগোষ্ঠীর ভাষাগুলোর নাম—কুরকু, খাসিয়া, গাড়ো, মগহী বা মগী, মুণ্ডারী এবং সাঁওতালী। এসব ভাষার অধ্যুষিত অঞ্চলের পরিমাণ, দ্রাবিড় গোষ্ঠীর ভাষার অধ্যুষিত অঞ্চলের তুলনায় অর্ধেক। ভোট-বর্মী ভাষাগুলোর নাম মিকি, নাগা, মেইতী এবং লুসাই। এসবের অধিকৃত স্থানের পরিমাণ অস্ট্রিকগোষ্ঠীর ভাষার স্থানের প্রায় সমান। গোষ্ঠীবহির্ভূত ভাষা কেবল একটি যার নাম বুরুশকী। উল্লিখিত অঞ্চলবিভাগের মাত্র অবশিষ্টটুকুর মধ্যে বুরুশকী সীমাবদ্ধ। এ গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় ভাষা নয়। তার লিপি বা লিপিবর্গের নিদর্শন-মূলক অস্তিত্ব নির্ধারণ করে কালানুকুমিক বিবর্তনের নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানই এখানে প্রধান লক্ষ্য।
আদিম আর্যলিপি হিসাবে ব্রাহ্মীলিপিই স্বীকৃত। তথাপি, সে লিপি বর্তমানে কোনখানে ব্যবহৃত হয় না। যদিও ব্রাহ্মী থেকেই অধিকাংশ লিপির উৎপত্তি হয়েছে। এমনকি, যা ব্রাহ্মীলিপির প্রাথমিক বিবর্তনজাত সে গুপ্তলিপির প্রচলনও একেবারে উঠে গিয়েছে। বর্তমানে যেসব লিপির সাহায্যে উল্লিখিত ভাষাগুলোর অধিকাংশ লিখিত হয় তা হচ্ছে- নাগরী, শারদা, টাকরী, গুরুমুখী, ভোগরী, চমিআলী, লণ্ডা, সিন্ধী, কৈথী, বাংলা, মৈথিলী, উড়িয়া, গুজরাটী, মোড়ী, তেলেগু, কনাড়ী, গ্রন্থী, মালয়ালম্, তুন্নু এবং তামিল। বেলুচী, পশতু, সিন্ধী, সিয়া (ভাষা), বর্তমানকাশ্মীরী এবং পশ্চিমা হিন্দি ভাষাগুলোর লিপি সেমিটিক শ্রেণীর অন্তর্গত। আবিষ্কৃত প্রাচীন খরোষ্ঠীলিপিও সেমিটিক শ্রেণীর। এ গ্রন্থের সুপরিবেশনায়, লিপির ক্রমিক বিবর্তনের ধারাধরে শ্রেণীগত ঐক্য বা অনৈক্য অনায়াসে ধারণায় আসবে। নানা বিভেদের মধ্যে ঐক্যও কিভাবে অবিকল থেকে যাচ্ছে তার বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত রয়েছে ভাষার সংগঠক ক্ষুদ্রতম উপাদানগুলোয়।
এ গ্রন্থের যাবতীয় পরিবেশনায় প্রমাণরূপে অবলম্বন করা হয়েছে প্রাচীন লেখ-মালা। মৌর্যসম্রাট অশোকের কাল থেকে শুরু করে কুমিক বর্তমানকালের দিকে এগিয়ে আসতে বহু শিলালেখ, তাম্রলেখ, স্বর্ণ-রৌপ্য-ফলক-লেখ, ভূজ- পত্র-কাগজ-পট-লেখ, ক্ষুদ্র-বৃহৎ স্তুত মঠ-মন্দির-লেখ এ গ্রন্থের আলোচ্য বিষয়ের প্রসঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে যার মাধ্যমে লিপিধারার আবর্তন-বিবর্তনের পাশাপাশি ঐতিহাসিক আলোচ্য ক্ষেত্রেরও বিকাশ ঘটে যাবে। পর্বতগাত্রস্থিত লেখ যেমন স্থানান্তরের অযোগ্য, যেমন-গিরনার-লেখ, তেমন, সযত্নে রক্ষিত বহু মঠ-মন্দিরের প্রাচীন পুথি-পুস্তকও অন্যত্র নিয়ে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা অসম্ভব। তাই, তার অবিকল প্রতিকৃতি বা ছাপ দেখেই সন্তুষ্ট থাকা ছাড়া উপায়ান্তর থাকলে আছে গুটিকতক সক্ষম উৎসাহী ব্যক্তির। তার জন্যেই চাই এমন কিছু অবলম্বন যার সহায়তায় ওসব দূর-দূরান্তের জ্ঞাতব্য বিষয় অনেক ব্যাপকভাবে আলোচনা চলতে পারে। এ বইখানা প্রকৃতপক্ষে, তেমনই একটি অবলম্বন যার মধ্যে বহু দুর্লভ লেখ-মালা হাজির করে দেয়া হয়েছে। হতে পারে প্রাসঙ্গিক প্রাচীন সেসব লেখ- থেকে কেবল অংশবিশেষের অবিকল লিপিচিত্র লিপিপন্নগুলোয় প্রাপ্য, সম্পূর্ণটা নয়, কিন্তু সেটা যে অবশ্যস্তামী। কারণ, কোন কোন শিলালেখ, তাম্র- লেখ এত বড় যে এগ্রন্থে তার স্থান হবে কি করে? তা ছাড়া, মুখ্য আলোচ্য লিপিবিবর্তনের নিদর্শন যোগাতে যতখানি অংশ যথেষ্ট হয়, তারচেয়ে বেশি তো নিষ্প্রয়োজন হতো। তালপাতার এবং ভোজ পাতার যে অতিপ্রাচীনলেখ আবিষ্কৃত হয়েছে তা অতীব বিস্ময়ের।
এ গ্রন্থে মূল বিষয়বস্তু যদিও প্রাচীন ভারতের বর্ণলিপি এবং সংখ্যালিপি। মুদ্রণও অপেক্ষাকৃত জটিল। মূলগ্রন্থের মূল এবং টিপ্পনীর হিন্দি অংশের অনুবাদে সর্বত্র বাংলা হলেও উদ্ধৃতিগুলো অবিকল সংরক্ষণ এখানে অপরিহার্য। যেহেতু, শিলালেখ, তাম্রপট্ট ইত্যাদির মধ্যেকার লেখটি যা আছে তার উপরই বিরতি-বিশ্লেষণ এবং গবেষণাকর্মেও সে মূল বয়ান দরকারী। কাজেই বাংলা, সংস্কৃত, প্রাকৃত-পালি ভাষার সমন্বয়ে এবং অপরিচিত নাম-ধামের তথা অসংখ্য স্মারণিকীর বাহুল্যে মুদ্রণকার্যটি যথেষ্ট সাবলীলতা পরিপন্থী।
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে প্রাচীন লিপি-বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা বই 'প্রাচীন ভারতীয় লিপিমালা' পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
No comments:
Post a Comment