তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ- প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়, পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ' তিনটি খন্ড একত্রে
লেখক- প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়
বইয়ের ধরন- ধর্ম সম্পর্কিত
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৬৮৬
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৬০এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত
'তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ'- এই বইটির লেখক সম্পর্কে কিছু কথা-
প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায় (জন্ম:১৮৮৫ - মৃত্যু:২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯) ছিলেন চিত্রশিল্পী এবং আধ্যাত্মিক বিষয়ক একজন লেখক । তন্ত্রধর্মের উপর তাঁর লেখালেখির দক্ষতার জন্যই তিনি পাঠকমহলে বিখ্যাত । কলকাতার গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে কিছুদিন বরোদা আর্ট কলেজে অধ্যক্ষতা করেছিলেন । এই 'তন্ত্রাভিলাসীর সাধুসঙ্গ' বইটি তাঁর প্রথম জীবনের গৃহত্যাগী অভিজ্ঞতা থেকে রচিত। তন্ত্র ধর্ম সম্পর্কে লেখকের প্রবল আগ্রহ এবং আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে পড়াশোনাও করেছিলেন তিনি। তবু এই সব ব্যাপারগুলি নিয়ে তার মনে ধোয়াশা ছিলো, কেননা তান্ত্রিকরা তন্ত্রের মূল বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের নিকট গোপনীতা বজায় রাখেন। তাছাড়া নানা রকম অনাচার ও নিয়মের কারণে তন্ত্র-সাধনা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে একটা নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। এসব বিষয়গুলি সঠিক অনুসন্ধানের জন্য প্রমোদকুমার সংসার ত্যাগ করে ১৯১১ থেকে ১৯১৮ পর্যন্ত বিভিন্ন তীর্থে, শশ্মানে, সাধনক্ষেত্রে ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং সেখানে পেয়েছেন বিভিন্ন বৈচিত্রেভরা সাধুসঙ্গ। তাঁদের সবাইকে যে তিনি শ্রদ্ধা করেছেন তা নয়, তবে অনেককেই কাছে পেয়ে তিনি ধন্য হয়েছেন এবং বিস্মৃত হয়েছেন তাঁদের জ্ঞান ও জানার পরিধি দেখে। সাধারণ মানুষের কাছে সাধারণঃত তান্ত্রিকরা তাঁদের নিগূঢ় সাধনার কথা সম্পর্কে কোন কথাই বলেন না। তবুও প্রমোদকুমার সেই সব সাধুদের কাছ থেকে সাধনা সম্পর্কে যাকিছু জানতে পেরেছেন বা বুঝতে পেরেছেন সেগুলি তাঁর লেখা এই বইতে তুলে ধরেছেন।
এই বইটি সম্পর্কে লেখকের কথা-
১৩৩৬ সালে হিমালয়পারে কৈলাস ও মানস-সরোবর ভ্রনণকাহিনী সংক্ষিপ্ত আকারে যখন ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হল ; ঘনিংঠ-সম্বন্ধ বিশিষ্ট বন্ধু-বান্ধব যারা অনুসদ্ধিৎস্য -আমার আরও পর্যটন, বিশেষতঃ সেই সময়কার সাধুসঙ্গ-কাহিনী শুনবার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধানতঃ আমি চিত্রশিল্পী, আমার ধ্যানের বস্তু এবং তার অভিব্যক্তি বা প্রকাশ-কৌশল রেখা, রং ও তুলির মধ্য দিয়ে;- সাহিত্য তা থেকে ভিন্ন; -আমার মনে হয় এর প্রকাশ-পদ্ধতিও বড় সহজ নয়। তবে ভ্রমণবৃত্তান্তখানি যে অবস্থায় বেরিয়েছিল, তাকে একটা প্রেরণা বলেই মনে হয়। কারণ, তার পর আমি যে আর কখনও সাহিত্যে হাত দিতে পারব, তা ছাড়া আমার যে আরও লেখবার বিষয় আছে, তাও তখন আমার কল্পনাতে ছিল না। আরও কথা, তখন চিত্রকলা আমার উপজীবিকা ছিল না। কারণ, তখনকার দিনে সংসারকে ভয়, সেই হেতু সংসার থেকে পালিয়েই বেড়াতাম আর তাতেই এতটা ভ্রমণ-অবকাশে নানা প্রকার সাধুসঙ্গের যোগাযোগ ঘটেছিল। কিন্তু এখন আমি একেবারে ডাহা সংসারী, ছবিই আমার অবলম্বন, তাই নিয়েই মগ্ন। উপজীবিকা শুধু নয়, আমার কতকগুলি বিশেষ ধ্যানের বিষয় ছিল তাই ফোটাবার চেষ্টায় দিনযাপন করি। আমি তখন যথার্থ স্বাধীন ছিলাম, যেহেতু বাইরে কোথাও কোন চাকরী বা বাঁধা কাজ তখন ছিল না।
এই সূত্র ধরে একদিন ‘উত্তরা’র পরিচালক শ্রীমান সরেশচন্দ্র এসে আমার ঘরে, আসনের সুমুখে হাজির হলেন। সাঁড়াশীর দুই দাড়া দিয়ে যেমন করে একটা জিনিসকে ধরে মানুষে কাৰ্য্য উদ্ধার করে, তেমনি করে দুটি প্রবল যুক্তি দিয়ে তিনি আমায় আঁকড়ে ধরে ‘উত্তরা'র জন্য তন্ত্রমতের সাধুসঙ্গের কথা লিখতে উদ্বুদ্ধ এবং বাধ্য করেন। তাঁর প্রথম অকাট্য যুক্তি এই যে, তন্ত্রসম্বন্ধে কথা বা আলোচনা বা জ্ঞান, যা কিছু আমি এত দিন পর্য্যটন এবং এতগুলি সাধুসঙ্গের ফলে লাভ করেছি, মোটকথা উল্লেখযোগ্য যা কিছু পেয়ে আমি উপকৃত হয়েছি, সে লাভেতে দেশবাসীর অংশ আছে—সতরাং, আমি সে সকল প্রকাশ করতে বাধ্য এবং তা জাতীয় সম্পত্তি। আলস্য করে সে সকল উপেক্ষা করবার আমার কোন অধিকার নেই। আর দ্বিতীয় যুক্তি এই যে, যেহেতু আমার এখন অবকাশ আছে এবং সম্প্রতি 'প্রবাসী’তে অতখানি একটি ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখে চুকেছি, আর সেটা সাধারণের ভালও লেগেছে, তখন কেন আমি প্রবাসী বাঙালীর মুখপত্র উত্তরার জন্যে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ভর্তি করব না। তার পর আর কথা চলে না, বিশেষতঃ ঐ লোকটির সঙ্গে ; তাঁকে যাঁরা জানেন ভালমতেই বুঝবেন।
তখন দীর্ঘ পর্য্যটনে আমার একমাত্র সঙ্গী ছিল একখানি খাতা, আর তার বুকে-ঢাকা একটি পেন্সিল। তার পাতায় পাতায় ছিল গান আর নানা কথা টোকা, আর ছিল সাধুসঙ্গের নানা আলোচনায় নোট। আরও ছিল অনেক গুলি সাধু সজ্জনের স্কেচ- যে সব মুর্ত্তি আমার মনে সাড়া তুলেছিল। ১৯১১ সাল থেকে ১৯১৮ সালের নানা কথায় পূর্ণ খাতাখানি। কোথায় পড়ে ছিল সে খাতা, হাতড়ে খুঁজে বার করে বসলাম। এই হল তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গের গোড়ার কথা।- প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে ভ্রমণ ও সাধু-সন্তদের লৌকিক ও অলৌকিক জীবন সম্পর্কে একটি অসাধারণ বই- 'তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ- প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়'-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
No comments:
Post a Comment