বিপ্লবের স্বপ্নভুমি কিউবা- আনু মুহাম্মদ বাংলা বই
বিশ্বায়িত পুঁজিবাদে ল্যাটিন আমেরিকা
ডিজিটাল বইয়ের নাম- বিপ্লবের স্বপ্নভুমি কিউবা
লেখক- আনু মুহাম্মদ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১৭৪
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৭এমবি
বইয়ের ধরন- তথ্যমুলক
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
ভূমিকা-
১৯৫৬ সালে মেক্সিকোর বন্দর থেকে রওনা হয়ে কিউবা মুক্ত করবার দৃঢ়পণ নিয়ে দেশে প্রবেশ করেছিলেন ফিদেল ক্যাস্ট্রো এবং সহযোদ্ধারা। কিউবায় সিয়েরা মেইস্ত্রা পাহাড় থেকে শুরু হয়েছিল তাদের গেরিলা যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয় তিন বছরের মাথায়। ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কিউবা প্রবেশ করে নতুন ইতিহাসে। কিন্তু পাহাড় থেকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য যে পোশাক নির্ধারণ করেছিলেন ফিদেল সেই পোশাক তাঁর আর পরিবর্তন হয়নি। আর ফিরে যাননি শাটপ্যান্ট বা অন্য পোশাকে। কেন? ফিদেল বলেন, 'যুদ্ধের তো শেষ হয়নি। পোশাক কী করে বদলাই?' একই কারণে শেভও আর করা হল না। সেই যুদ্ধ আর থামেনি। রাতদিনের হিসাব ফিদেলের তাই থাকলো যুদ্ধের মতোই। কদিন আগে হাসপাতালে পড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত খাওয়া ঘুম পারিবারিক জীবন কোনকিছুরই স্থিরতা ছিলনা। কিউবার যুদ্ধে ক্রমে ফ্রন্ট বেড়েছে কেবল।
যুদ্ধ করতে করতেই ফিদেল ক্যাস্ট্রো যখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তখন এই বই প্রকাশিত হচ্ছে। ফিদেলের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। কিন্তু এই অপূরণ বোধ করিনি কিউবায়। কেননা ব্যক্তি এখানে সমষ্টির মধ্যেই। আমার ইচ্ছা ছিল একটি বিপ্লবকে দেখা, যা থামেনি। একটা ছোট জনপদ দেখা যে নিজের চাইতে অনেক বড় হয়ে উঠেছে এই বিশ্বে। তার শক্তি আর ত্রুটি দেখা। দেখেছি। আরও দেখার ইচ্ছা নিয়েই ফিরেছি। কিউবা বিশ্বের সামনে অনেক আগেই নিজের থেকে বহু বহু গুণ বড় হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র এই বিশ্বে যে দানবীয় সাম্রাজ্যবাদের মুখ হিসেবে হাজির তার এত পরাক্রমকে থোড়াই কেয়ার করে তার নাকের ডগায় শুধু নিজে মানুষের সমাজ গড়ে তোলেনি, একের পর এক পদচিহ্ন রেখে যাচ্ছে। 'শতবর্ষের নিঃসঙ্গতা' ভেঙে ল্যাটিন আমেরিকায় কিউবা এখন অনেক শক্তিশালী সহযাত্রী তৈরি করেছে। অনেকের একটা স্থুল ধারণায় বিপ্লবের লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন বা সকলের ভাত কাপড়ের ব্যবস্থা করা। এসব কিছু বড় কোন স্বপ্ন না দেখেও করা যায়। বিপ্লবের লক্ষ্য আসলে তা নয়। আমরা বিপ্লবের স্বপ্ন দেখি পরাজিত সংকুচিত বিপর্যস্ত মানুষের ভেতর থেকে মানুষকে আবিষ্কার করবার জন্য। মানুষ সেখানে শতভাবে প্রস্ফুটিত, মানুষ সেখানে নিছক প্রাণী নয়, মানুষ মুক্ত মানুষ অনেক বড় সৃষ্টিকর্মী। এরকম অবস্থা তৈরি হয় নির্দেশ দিয়ে নয়, তৈরি হয় সামষ্টিক উদ্দীপনায়, যার মধ্যে ব্যক্তি নিজেকে বিকশিত করতে সক্ষম হয়। তাই এখানে সৃষ্টির আনন্দ প্রতিবাদে আর সহমর্মিতায়। কিউবা বিপ্লব, আমার ধারণা, বিপ্লবকে ঐ পর্যায়েই নিয়ে যেতে পেরেছে। এ এক অপূর্ব স্বপ্ন। এক অসাধারণ সৃষ্টির আনন্দ। এ এক স্পিরিচুয়ালিটি যা কোন ধর্মও দিতে সক্ষম নয়। বস্তুগত সংকট তার আছে কিন্তু সেখানে মানুষের ব্যক্তিক আর সামষ্টিক শক্তিই বিপ্লবকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আর বিপ্লব তাতো চলছেই।
বিপ্লবের পর থেকে কিউবার বিভিন্ন উঠানামা গেছে। ৫৯ থেকে ৭০-৭১ আবর্জনা পরিষ্কার করতেই গেলো। ১৯৭১ থেকে গোছাতে গেলো। গোছানোকালে পরাজিত হল অনেক ভুল সহযাত্রী। ১৯৯০ এ নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে ছোট্ট কিউবা । সামনে রক্তমুখে হিংস্র দানব। অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে। এই ইঁচড়ে পাকা, লাল পিপড়া এখন যাবে কোথায়? কিন্তু কোন যুদ্ধেই তো হাল ছাড়েনি কিউবার বিপ্লবীরা। কে প্রবল? না, প্রমাণিত হয়েছে শারীরিক শক্তি যতই থাকুক, নৈতিকতায় অন্তর্গত শক্তির ছোট্ট কিউবার সামনে যুক্তরাষ্ট্র দাঁড়াতে সক্ষম নয়। দাঁড়াতে পারে নি এতদিন। এই যে কিউবা বিপ্লব এক বড় শক্তি, তার অর্থ কি এটা যে, তা টিকবেই? জানি না। বিশ্ব হায়েনাদের কত চাতুরি । সবদিক সামাল দেয়া যাবেই এই নিশ্চয়তা কে দিতে পারে? না টিকলেও তার তাপ আমাদের ঠিকই উষ্ণতা দেবে। সৃষ্টি হচ্ছে, হতেই থাকবে বৃহত্তর কিউবা।
অনেক পিছিয়ে অনেক ছাড় দিয়ে, অনেক সৃজনশীলতা দিয়ে নিজের ভিত্তিকে অক্ষুন্ন রেখে কিউবা একা তার সবচাইতে বিপন্ন সময় পার করেছে। ৯০ দশকের শেষ থেকে তার সাথে সাহস নিয়ে যোগ দিয়েছে একে একে ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিল, পেরু, উরুগুয়ে, চিলি। ভেঙে পড়েছে সাম্রাজ্যবাদের জমকালো অলীক প্রকল্প। ল্যাটিন আমেরিকা এখন ভিন্ন পথের যাত্রী। আমাদের সহযোদ্ধা।
বলিভার, মার্তি, চে, ফিদেল, শ্যাভেজ আর মোরালস এর ল্যাটিন আমেরিকা তাই আমাদের বিশ্বের অন্তর্গত। আমরা যে বিশ্ব তৈরি করতে চাই। স্বপ্ন দেখি। লড়াই করি। সেই বিশ্ব সম্পর্কে কিছু দেখা, জানা, বোঝা থেকে এই গ্রন্থ। হয়তো তা আমাদের সামষ্টিক বোধে কিছু যোগ করতে পারে।- আনু মুহাম্মদ
দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা-
এই গ্রন্থের প্রথম প্রকাশের পর প্রায় ৩ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। কিউবার উপর মার্কিনী অবরোধ এখনও অব্যাহত, ল্যাটিন আমেরিকায় প্রতিরোধ আর পাল্টা যাত্রার গতিও কমেনি। ভেনেজুয়েলা ও বলিভিয়া নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে যতটা সম্ভব নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সচেষ্ট। তবে সংকট ও প্রতিবন্ধকতা সেখানে কম নেই। গত ২ বছরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যের বিশাল প্রতিষ্ঠানসমূহের অন্তসারশূন্যতা, জালিয়াতি, প্রতারণা আরও উন্মোচিত হয়েছে। এই সংকটের মধ্যে আরও স্পষ্ট হয়েছে যে, সাম্রাজ্যবাদী কেন্দ্র দেশসমূহের জনগণ কতটা নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছেন। জাতীয়করণ এবং জনগণের অর্থ দিয়ে কোম্পানী উদ্ধারের মাধ্যমে টাল সামলাতে চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ। নৈরাজ্য ও অনিশ্চয়তা এবং সর্বোপরি বিদ্যমান ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর অনাস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি যখন এই ভূমিকা লিখছি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তখন পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সাম্প্রতিক সংকটের মুখে, কৃচ্ছতা সাধন' ও 'সংকট সমাধানের নামে শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জনগণের বিভিন্ন অধিকার সংকোচন আর শ্রমিক ছাঁটাই চলছে। একইসঙ্গে এসবের বিরুদ্ধে ইউরোপজুড়ে চলছে শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের একের পর এক বিক্ষোভ কর্মসূচি।
ফিদেল ক্যাস্ট্রো এখনও বেঁচে আছেন। যে দুরারোগ্য ব্যাধিতে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন তাতে তার মৃত্যু প্রায় অবধারিত ছিল। কিউবাতে বিশ্বের সর্বোত্তম মানের চিকিৎসা সেবার জ্ঞান ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায়, ফিদেলকে চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও যেতে হয়নি। বরঞ্চ নিজ দেশে অন্য যে কোন নাগরিক যে চিকিৎসা পেতে পারেন সেই চিকিৎসায় তিনি আরোগ্য লাভ করেছেন। তবে তিনি আর আগের মত এখন কর্মক্ষম নেই, আনুষ্ঠানিক কোন দায়িত্বেও নেই। তারপরও কিউবা এবং বিশ্বের প্রতিদিনের ঘটনা প্রবাহের প্রতি আছে তার প্রখর দৃষ্টি। লিখছেনও প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ।
অবশেষে ২০১৬ সালের ২৫ই নভেম্বর এই অসাধারণ বিপ্লবী হাভানায় মৃত্যুবরণ করেন।
পাঠকগণ, এই তথ্যপূর্ণ বইটি থেকে আপনারা ফিদেল ক্যাস্ট্রো ও কিউবার বিশ্বব্যাপী বিপ্লবের সমস্ত তথ্য পাবেন।
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা কিউবার বিপ্লব সংক্রান্ত - 'বিপ্লবের স্বপ্নভুমি কিউবা- আনু মুহাম্মদ' বইটির পিডিএফ সংগ্রহ করিবেন।
বিশ্বায়িত পুঁজিবাদে ল্যাটিন আমেরিকা
ডিজিটাল বইয়ের নাম- বিপ্লবের স্বপ্নভুমি কিউবা
লেখক- আনু মুহাম্মদ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১৭৪
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৭এমবি
বইয়ের ধরন- তথ্যমুলক
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
ভূমিকা-
১৯৫৬ সালে মেক্সিকোর বন্দর থেকে রওনা হয়ে কিউবা মুক্ত করবার দৃঢ়পণ নিয়ে দেশে প্রবেশ করেছিলেন ফিদেল ক্যাস্ট্রো এবং সহযোদ্ধারা। কিউবায় সিয়েরা মেইস্ত্রা পাহাড় থেকে শুরু হয়েছিল তাদের গেরিলা যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয় তিন বছরের মাথায়। ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কিউবা প্রবেশ করে নতুন ইতিহাসে। কিন্তু পাহাড় থেকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য যে পোশাক নির্ধারণ করেছিলেন ফিদেল সেই পোশাক তাঁর আর পরিবর্তন হয়নি। আর ফিরে যাননি শাটপ্যান্ট বা অন্য পোশাকে। কেন? ফিদেল বলেন, 'যুদ্ধের তো শেষ হয়নি। পোশাক কী করে বদলাই?' একই কারণে শেভও আর করা হল না। সেই যুদ্ধ আর থামেনি। রাতদিনের হিসাব ফিদেলের তাই থাকলো যুদ্ধের মতোই। কদিন আগে হাসপাতালে পড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত খাওয়া ঘুম পারিবারিক জীবন কোনকিছুরই স্থিরতা ছিলনা। কিউবার যুদ্ধে ক্রমে ফ্রন্ট বেড়েছে কেবল।
যুদ্ধ করতে করতেই ফিদেল ক্যাস্ট্রো যখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তখন এই বই প্রকাশিত হচ্ছে। ফিদেলের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। কিন্তু এই অপূরণ বোধ করিনি কিউবায়। কেননা ব্যক্তি এখানে সমষ্টির মধ্যেই। আমার ইচ্ছা ছিল একটি বিপ্লবকে দেখা, যা থামেনি। একটা ছোট জনপদ দেখা যে নিজের চাইতে অনেক বড় হয়ে উঠেছে এই বিশ্বে। তার শক্তি আর ত্রুটি দেখা। দেখেছি। আরও দেখার ইচ্ছা নিয়েই ফিরেছি। কিউবা বিশ্বের সামনে অনেক আগেই নিজের থেকে বহু বহু গুণ বড় হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র এই বিশ্বে যে দানবীয় সাম্রাজ্যবাদের মুখ হিসেবে হাজির তার এত পরাক্রমকে থোড়াই কেয়ার করে তার নাকের ডগায় শুধু নিজে মানুষের সমাজ গড়ে তোলেনি, একের পর এক পদচিহ্ন রেখে যাচ্ছে। 'শতবর্ষের নিঃসঙ্গতা' ভেঙে ল্যাটিন আমেরিকায় কিউবা এখন অনেক শক্তিশালী সহযাত্রী তৈরি করেছে। অনেকের একটা স্থুল ধারণায় বিপ্লবের লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন বা সকলের ভাত কাপড়ের ব্যবস্থা করা। এসব কিছু বড় কোন স্বপ্ন না দেখেও করা যায়। বিপ্লবের লক্ষ্য আসলে তা নয়। আমরা বিপ্লবের স্বপ্ন দেখি পরাজিত সংকুচিত বিপর্যস্ত মানুষের ভেতর থেকে মানুষকে আবিষ্কার করবার জন্য। মানুষ সেখানে শতভাবে প্রস্ফুটিত, মানুষ সেখানে নিছক প্রাণী নয়, মানুষ মুক্ত মানুষ অনেক বড় সৃষ্টিকর্মী। এরকম অবস্থা তৈরি হয় নির্দেশ দিয়ে নয়, তৈরি হয় সামষ্টিক উদ্দীপনায়, যার মধ্যে ব্যক্তি নিজেকে বিকশিত করতে সক্ষম হয়। তাই এখানে সৃষ্টির আনন্দ প্রতিবাদে আর সহমর্মিতায়। কিউবা বিপ্লব, আমার ধারণা, বিপ্লবকে ঐ পর্যায়েই নিয়ে যেতে পেরেছে। এ এক অপূর্ব স্বপ্ন। এক অসাধারণ সৃষ্টির আনন্দ। এ এক স্পিরিচুয়ালিটি যা কোন ধর্মও দিতে সক্ষম নয়। বস্তুগত সংকট তার আছে কিন্তু সেখানে মানুষের ব্যক্তিক আর সামষ্টিক শক্তিই বিপ্লবকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আর বিপ্লব তাতো চলছেই।
বিপ্লবের পর থেকে কিউবার বিভিন্ন উঠানামা গেছে। ৫৯ থেকে ৭০-৭১ আবর্জনা পরিষ্কার করতেই গেলো। ১৯৭১ থেকে গোছাতে গেলো। গোছানোকালে পরাজিত হল অনেক ভুল সহযাত্রী। ১৯৯০ এ নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে ছোট্ট কিউবা । সামনে রক্তমুখে হিংস্র দানব। অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে। এই ইঁচড়ে পাকা, লাল পিপড়া এখন যাবে কোথায়? কিন্তু কোন যুদ্ধেই তো হাল ছাড়েনি কিউবার বিপ্লবীরা। কে প্রবল? না, প্রমাণিত হয়েছে শারীরিক শক্তি যতই থাকুক, নৈতিকতায় অন্তর্গত শক্তির ছোট্ট কিউবার সামনে যুক্তরাষ্ট্র দাঁড়াতে সক্ষম নয়। দাঁড়াতে পারে নি এতদিন। এই যে কিউবা বিপ্লব এক বড় শক্তি, তার অর্থ কি এটা যে, তা টিকবেই? জানি না। বিশ্ব হায়েনাদের কত চাতুরি । সবদিক সামাল দেয়া যাবেই এই নিশ্চয়তা কে দিতে পারে? না টিকলেও তার তাপ আমাদের ঠিকই উষ্ণতা দেবে। সৃষ্টি হচ্ছে, হতেই থাকবে বৃহত্তর কিউবা।
অনেক পিছিয়ে অনেক ছাড় দিয়ে, অনেক সৃজনশীলতা দিয়ে নিজের ভিত্তিকে অক্ষুন্ন রেখে কিউবা একা তার সবচাইতে বিপন্ন সময় পার করেছে। ৯০ দশকের শেষ থেকে তার সাথে সাহস নিয়ে যোগ দিয়েছে একে একে ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিল, পেরু, উরুগুয়ে, চিলি। ভেঙে পড়েছে সাম্রাজ্যবাদের জমকালো অলীক প্রকল্প। ল্যাটিন আমেরিকা এখন ভিন্ন পথের যাত্রী। আমাদের সহযোদ্ধা।
বলিভার, মার্তি, চে, ফিদেল, শ্যাভেজ আর মোরালস এর ল্যাটিন আমেরিকা তাই আমাদের বিশ্বের অন্তর্গত। আমরা যে বিশ্ব তৈরি করতে চাই। স্বপ্ন দেখি। লড়াই করি। সেই বিশ্ব সম্পর্কে কিছু দেখা, জানা, বোঝা থেকে এই গ্রন্থ। হয়তো তা আমাদের সামষ্টিক বোধে কিছু যোগ করতে পারে।- আনু মুহাম্মদ
দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা-
এই গ্রন্থের প্রথম প্রকাশের পর প্রায় ৩ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। কিউবার উপর মার্কিনী অবরোধ এখনও অব্যাহত, ল্যাটিন আমেরিকায় প্রতিরোধ আর পাল্টা যাত্রার গতিও কমেনি। ভেনেজুয়েলা ও বলিভিয়া নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে যতটা সম্ভব নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সচেষ্ট। তবে সংকট ও প্রতিবন্ধকতা সেখানে কম নেই। গত ২ বছরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যের বিশাল প্রতিষ্ঠানসমূহের অন্তসারশূন্যতা, জালিয়াতি, প্রতারণা আরও উন্মোচিত হয়েছে। এই সংকটের মধ্যে আরও স্পষ্ট হয়েছে যে, সাম্রাজ্যবাদী কেন্দ্র দেশসমূহের জনগণ কতটা নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছেন। জাতীয়করণ এবং জনগণের অর্থ দিয়ে কোম্পানী উদ্ধারের মাধ্যমে টাল সামলাতে চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ। নৈরাজ্য ও অনিশ্চয়তা এবং সর্বোপরি বিদ্যমান ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর অনাস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি যখন এই ভূমিকা লিখছি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তখন পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সাম্প্রতিক সংকটের মুখে, কৃচ্ছতা সাধন' ও 'সংকট সমাধানের নামে শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জনগণের বিভিন্ন অধিকার সংকোচন আর শ্রমিক ছাঁটাই চলছে। একইসঙ্গে এসবের বিরুদ্ধে ইউরোপজুড়ে চলছে শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের একের পর এক বিক্ষোভ কর্মসূচি।
ফিদেল ক্যাস্ট্রো এখনও বেঁচে আছেন। যে দুরারোগ্য ব্যাধিতে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন তাতে তার মৃত্যু প্রায় অবধারিত ছিল। কিউবাতে বিশ্বের সর্বোত্তম মানের চিকিৎসা সেবার জ্ঞান ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায়, ফিদেলকে চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও যেতে হয়নি। বরঞ্চ নিজ দেশে অন্য যে কোন নাগরিক যে চিকিৎসা পেতে পারেন সেই চিকিৎসায় তিনি আরোগ্য লাভ করেছেন। তবে তিনি আর আগের মত এখন কর্মক্ষম নেই, আনুষ্ঠানিক কোন দায়িত্বেও নেই। তারপরও কিউবা এবং বিশ্বের প্রতিদিনের ঘটনা প্রবাহের প্রতি আছে তার প্রখর দৃষ্টি। লিখছেনও প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ।
অবশেষে ২০১৬ সালের ২৫ই নভেম্বর এই অসাধারণ বিপ্লবী হাভানায় মৃত্যুবরণ করেন।
পাঠকগণ, এই তথ্যপূর্ণ বইটি থেকে আপনারা ফিদেল ক্যাস্ট্রো ও কিউবার বিশ্বব্যাপী বিপ্লবের সমস্ত তথ্য পাবেন।
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা কিউবার বিপ্লব সংক্রান্ত - 'বিপ্লবের স্বপ্নভুমি কিউবা- আনু মুহাম্মদ' বইটির পিডিএফ সংগ্রহ করিবেন।
No comments:
Post a Comment